যেকোন লোকের বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী শরীরের ওজন কমে গেলে দ্রুত প্রয়োজন হয় পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়া। আবার অনেকে আছেন প্রচুর পরিমাণে খাবার খেলেও ওজন বাড়েনা।তার কারণ হচ্ছে সঠিক সময়ে খাবার না খাওয়ার কারণে।
আসুন তাহলে কি কি খাবার খেলে ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পাবে তার একটি লিস্ট ও ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নেই।
দ্রুত শরীরের ওজন বৃদ্ধি করার উপায়
ধরুন দিন দিন আপনার ওজন কমে যাচ্ছে। এমতবস্থায় দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করার একমাত্র উপায় হল নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন।
পুষ্টিকর খাবার হলো দ্রুত ওজন বাড়ানোর সহজ উপায়। যেসব খাবার বেশি ক্যালরি যুক্ত, সেসব খাবার নিয়মিত খেলে ওজন দ্রুতই বেড়ে যাবে। ওজন বাড়ানোর জন্য অবশ্যই পুষ্টিকর খাদ্য বাছাই করতে হবে।
কোন খাবার খেলে ওজন বাড়বে তার একটি লিস্ট তৈরি করে নিতে হবে। তাহলে সবচেয়ে বেশি সুবিধা হবে।
গরমে শরীর ঠান্ডা রাখার ১০টি খাবার বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন…
লাল মাংস
লাল মাংসে অনেক পুষ্টি আছে। এতে ভিটামিন , প্রোটিন , আয়রন আছে যা শরীরের গঠনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরিমানে যতটুকু প্রয়োজন ঠিক তত টুকুই মাংস খাবেন। কারণ এই লাল মাংসে প্রচুর পরিমানে চর্বি আছে। তাই , বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
পাস্তা
পাস্তাতে আছে প্রচুর পরিমানে ক্যালরি ও প্রোটিন। যা শরীরের জন্য বেশ উপকারী। তবে ভাজা পাস্তার চাইতে সেদ্ধ করা পাস্তায় উপকার বেশি পাওয়া যায়। তাছাড়া পাস্তা হজম শক্তি বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে।
আম
আম খেলে হারিয়ে যাওয়া ওজন বৃদ্ধি পায়। আমে আছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার, ভিটামিন সি, আয়রন, ক্যালসিয়াম। আম সিজনাল একটি ফল , তাই নির্দিষ্ট সময়ে আম পাওয়া যায়।
আমে রয়েছে বেশি পুষ্টি উপাদান, যা শরীরে ভালো রাখে ও ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।তাছাড়া, আম শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর করার পাশাপাশি কমিয়ে যাওয়া ওজন বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
দুধ
দুধে আছে অনেক পুষ্টিগুণ। ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, ডি, বি ১২, পটাশিয়াম যা শরীরের গঠনে সহায়তা করে। দুধ শরীরকে ভালো রাখে ও শরীরের হাড় মজবুত করে। এক গ্লাস দুধ পানে অন্যান্য খাবারের চাহিদা অনেকাংশে কমে যায়। দুধ হল স্তন্যপায়ী প্রাণীর স্তন্যগ্রন্থি থেকে উৎপন্ন অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এক প্রকার সাদা তরল পদার্থ এবং দুধ মানুষের একটি প্রধান খাদ্য। অন্যান্য খাদ্যগ্রহণে সক্ষম হয়ে ওঠার আগে এটিই হল স্তন্যপায়ী(মানুষসহ যারা স্তন্যদুগ্ধপানকারী) শাবকদের পুষ্টির প্রধান উৎস। স্তন থেকে দুগ্ধ নিঃসরণের প্রাথমিক পর্যায়ে কোলোষ্ট্রাম সমৃদ্ধ শাল দুধ উৎপন্ন হয়, যাতে মায়ের দেহ হতে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শাবকের দেহে নিয়ে যায় এবং রোগাক্রান্ত হবার ঝুঁকি কমায়। এতে আমিষ ও ল্যাক্টোজ সহ অন্যান্য অনেক পুষ্টি উপাদান আছে। আন্তঃপ্রজাতির দুধ গ্রহণ করা অস্বাভাবিক নয়, বিশেষত মানুষের ক্ষেত্রে, যারা অন্য অনেকে স্তন্যপায়ী প্রাণীর দুধও গ্রহণ করে।
রাতে ঘুমানোর আগে কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন…
ডিম
ডিমে আছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন যা ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। তবে সিদ্ধ ডিম ওজন বাড়াতে খুবই উপকারী। প্রোটিনের ভালো উৎস হচ্ছে ডিম। ডিম শরীরের জন্য খুবই উপকারী। কেউ হাঁসের ডিম খেতে পছন্দ করেন, কেউ আবার মুরগির। হাঁসের ডিমে একটা আঁশটে গন্ধ থাকায় অনেকেই খেতে চান না। আবার মুরগির ডিমেও অনেকের অরুচি। আমরা অনেকেই জানি না মুরগির না হাঁসের– কোন ডিমে পুষ্টি বেশি।
আলু
আলু আঁশ জাতীয় খাবার। আলু কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার, তাই আলু পেশি বাড়াতে সাহায্য করে। আলু খুব দ্রুত ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। আলুতে থাকে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি। আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে এই ভিটামিন। তাছাড়া আলু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ সমৃদ্ধ। এটিও আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই নানা ধরনের রোগ-জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য নিয়মিত আলু খাওয়া জরুরি।
কলা
কলাতে আছে অধিক পুষ্টিগুণ । এতে আছে ভিটামিন বি৬, সি, পটাশিয়াম, কার্বোহাইড্রেট, ক্যালসিয়াম। যা শরীরে পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে ও ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। কলা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ একটি ফল। যা কি না মানব দেহের ক্ষয়পূরণ করে পুষ্টিসাধন করে সুস্থ সবল রাখে কলা।ওজন বৃদ্ধিতে শুধু খাবারই উপকারী নয়। এর সাথে ঘুম ও শরীরচর্চাও প্রয়োজন আছে।
ঘুম
ঠিক মতো ঘুমালে দেহের ওজন দ্রুত বৃদ্ধির পায়। শরীরের জন্য ঘুম খুবই উপকারী। রাতে ঠিকঠাক মতো ঘুমিয়ে পড়া ও সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করতে হবে।
দিনে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। ভালোভাবে ঘুম হলে আপনার অন্য কাজেও মনোযোগ থাকবে ভালোভাবে।
ঘুমানোর স্বাস্থ্যসম্মত উপায় কী? বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন…
নিয়মিত শরীরচর্চা
নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের জন্য বেশ কার্যকরী হয়। নিয়মিত ব্যায়াম আপনার হাড় বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি শরীরচর্চার মাধ্যমে খুব সহজে ওজন বাড়ানো সম্ভব হতে পারে। নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খেলে শরীর সুস্থ থাকে। অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে বাহিরের ভাজা পোড়া খাবার কোন ভাবেই কাম্য নয়। এগুলো খাবার অরিরিক্ত তেল ও মসলা দিয়ে তৈরি হয়। এতে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়।
পরিশেষে
মনে রাখবেন, শরীরের ওজন বৃদ্ধিতে সবসময় পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। পুষ্টিকর খাবারের একটি লিস্ট করে নিবেন বা সাপ্তাহিক একটি প্লান যে কখন কি খাবেন। এতে করে সময়ও কম খরচ হবে। সময়মত নিজের প্রয়োজনীয় খাবারও খেতে পারবেন। নিয়ম মতো খাবার খেলে, রাতে ভালো ঘুম ও শরীরচর্চা করলে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পাবে।